Add caption |
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের
একমাত্র আবাসিক
বিশ্ববিদ্যালয়। সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে
নয়, সমৃদ্ধ
জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ক্ষেত্রেও
একক বৈশিষ্ট্যের
দাবিদার এ
বিশ্ববিদ্যালয়। বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রভাবে
ক্যাম্পাসে লালচে মাটির বুক চিরে
দাঁড়িয়ে থাকা
সারি-সারি
সাজানো বৃক্ষের
সমাহার, অজস্র
পাখির অবিরত
কলতান, অহিংস্র
বন্যপ্রাণীর স্বতঃস্ফূর্ত বিচরণ, লাল পদ্ম
ফোটা লেকের
নয়নাভিরাম সৌন্দর্য ক্যাম্পাসকে করেছে অনন্য। সূদুর
সাইবেরিয়া থেকে আগত পরিযায়ী পাখিরা
এখানকার পরিচিতিকে
বিকশিত করেছে
দেশব্যাপী, বয়ে এনেছে এক স্বতন্ত্র
মর্যাদা।
ক্যাম্পাসে প্রতিবছর প্রায় ২৪৪ প্রজাতির
অতিথি পাখি
আসে।
এদের বেশিরভাগই
হাঁস জাতীয়
ও পানিতে
বসবাস করে
। হাঁস জাতীয় সরালি, পাতারি
হাঁস, পাতিতারা,
গয়ার, বামুনিয়া
হাঁস, বাড়িঘোরা,
পান্তামুখী, ছোট জিরিয়া, চিতাটুপি, জলপিপি
ও পানকৌড়ি
ইত্যাদি প্রধান
। এসব পাখি সম্পর্কে জানা
এবং সচেতনতা
সৃষ্টির জন্য
গত ৭
ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে পাখিমেলা-২০১৪
আয়োজন করা
হয় ।
এবার মেলার
মূল সেøাগান ছিল
– ‘পাখ-পাখালি
দেশের রতœ,
আসুন করি
সবাই যতœ’। মেলার
প্রধান অতিথি
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম
এ মতিন
পাখিমেলা উদ্বোধন
করেন।
পরিবেশ ও
বন মন্ত্রণালয়ের
অতিরিক্ত সচিব
ড. অপরূপা
চৌধুরীর সভাপতিত্বে
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের
বিশেষ অতিথি
ছিলেন বাংলাদেশ
বার্ড ক্লাবের
সভাপতি ইনাম
আল হক,
আরণ্যক ফাউন্ডেশনের
নির্বাহী পরিচালক
ফরিদ উদ্দিন
আহমেদসহ প্রমুখ
ব্যক্তিবর্গ। পাখিমেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক
মো. মোস্তফা
ফিরোজসহ অন্যরা
বক্তৃতায় পরিবেশ
ও প্রকৃতিকে
বাঁচাতে জনসচেতনতা
বৃদ্ধির ওপর
গুরুত্ব আরোপ
করেন।
ব্যতিক্রমধর্মী এ মেলা উপলক্ষে সকাল
থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের ভিড়। কেউ
কেউ সপরিবারে,
কেউ বা
বন্ধুরা মিলে
পাখিমেলা দেখতে
এসেছেন।
বিশেষ করে
তরুণ-তরুণী
ও শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি
ছিল চোখে
পড়ার মতো। ফলে
ক্যাম্পাসে এক উৎসবমুখর অবস্থা বিরাজ
করে।
বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাজাহান
বাদশা পরিবারের
সবাইকে নিয়ে
এসেছেন পাখিমেলায়। তিনি
বলেন, আমাদের
ক্যাম্পাস এমনিতেই সুন্দর। আজকের
ব্যতিক্রমধর্মী এ মেলা সেই সৌন্দর্যকে
দিয়েছে ভিন্ন
মাত্রা।
দিনব্যাপী এ মেলায় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, পাখির
আলোকচিত্র ও পত্র-পত্রিকা প্রদর্শনী,
শিশু-কিশোরদের
পাখি পর্যবেক্ষণ
এবং কুইজ
প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
এছাড়া এবারই
প্রথম সবচেয়ে
বেশিসংখ্যক দুষ্প্রাপ্য ও বিলুপ্তপ্রায় পাখি
দেখার জন্য
বন বিভাগের
কর্মকর্তা মনির খান এবং তার
স্ত্রী তানিয়া
খান বিগ
বার্ড অব
দ্য ইয়ার-২০১৪ সম্মাননা
লাভ করেন। পাখিমেলা
উপলক্ষে আগত
দর্শনার্থীদের পাখিদের অস্তিতত্ব বিপন্ন হওয়া
রোধে সচেতন
হবে, সৌন্দর্যে
মুগ্ধ হয়ে
প্রকৃতিপ্রেমী হবে এবং প্রকৃতি ও
পাখিদের প্রতি
সদয় হবে
এ শিক্ষা
নিয়েই সবাই
ঘরে ফিরেছেন
।
No comments:
Post a Comment