Add caption |
ক্যাম্পাস থেকে রাতের
খাবার খেয়ে সন্ধ্যায় রওনা
হলাম সবাই খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে। সড়ক পথে
ক্লান্ত শরীরে রাতের
জম্পেশ ঘুমটা হয়েছিলো গাড়ীতেই। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখাতে
রাতের অন্ধকার ভেদ
করে সূর্য মামার
যখন আগমন তখন
চোখ ডলতে ডলতে
গাড়ী থেকে একে
একে বেরিয়ে পড়ল
সবাই।
ক্ষুধার রাজ্যে সবার
উদর যখন অশান্ত
তখন সেলফি তুলেই
শান্তি খুঁজে নিল
তামান্না, মামুন, জয়,
কাওসার, মাসুদ এবং
বাদশা।
নাস্তা শেষে বিভাগের পূর্ব
নির্ধারিত মাঠকর্মে বেড়িয়ে
পড়লাম সবাই। ৪০
জন শিক্ষার্থীকে ৩টি
গ্রুপে বিভক্ত করলেন
শিক্ষকরা। আতিক স্যার,
মুজাহিদ স্যার, আরিফা
ম্যাম ও পিংকি
ম্যামের দিক-নির্দেশনায় বেরিয়ে
পড়লাম সবাই নির্ধারিত কাজে।
দুর্গম পাহাড়ে কাঠফাটা রোদে
এগিয়ে চলল মাঠকর্ম। ঘর্মাক্ত শরীর
কালো রংঙের আবরণ
থেকে কারো নিস্তার মিলল
না। দু’দিন
টানা কঠোর পরিশ্রম করার
পর ভাগ্যদেবী যেন
সুপ্রসন্ন হলেন অবশেষে!
পরিসমাপ্তি ঘটলো নির্ধারিত মাঠকর্মের। এবার
সবার ঘুরাঘুরির পালা।
কিন্তু ঐদিন হোটেল
ইকোছড়িতে স্বস্তির নিঃশ্বাসেই রাত
কেটে গেল। পরদিন
ভোরে নাস্তা সেরে
সবাই আলুটিলার উদ্দেশ্যে বের
হই। আলুটিলার সুরঙ্গের মধ্যে
ঢোকা ছিলো সবার
জন্য মজার এবং
সবচেয়ে বেশি উত্তেজনাকর। ভয়ে
জড়সড় শামীমা মাহির
অনুভূতিটা ছিলো ঠিক
যেন থ্রিলার মুভির
অভিনেত্রী চরিত্রের।
আলুটিলা ঘুরে রিসিং
ঝর্ণায় সবাই যখন
ব্যস্ত শীতল হতে।
তখনই বিপত্তি ঘটালো
অমিত। রিসিং ঝর্ণায়
গোসল করতে গিয়ে
পা ফসকে আহত
হয়। সবার আনন্দে
আচমকা টান পড়ে।
যাত্রা বিরতি ঘটিয়ে
দুঃখ ভারাক্রান্ত মন
নিয়ে সবাই ফিরে
আসি হোটেলে। চিকিত্সা শেষে
রাতে অমিত হোটেলে
ফিরলে শুরু হয়
আবার হাসি-ঠাট্টা।
পরদিন খুব ভোরে
চাঁদের গাড়িতে চড়ে
খাগড়াছড়ির আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে এগিয়ে
চললাম রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে
বড় ইউনিয়ন সাজেকের পথে।
চাঁদের গাড়িতে আসফিক,
মেহেদি, লিমনের আনন্দ
দেখে মনে হচ্ছিলো চাঁদের
গাড়ি বোধহয় ওদের
চাঁদের দেশ ভ্রমণে
নিয়ে যাচ্ছে। সাজেকে পৌছানোর পর
মুক্ত আকাশের নিচে বিশাল সমৃদ্ধ বনভূমি,
পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে
জুম চাষ, পাহাড়ের প্রশস্ত বুক, আদিবাসীদের ঘর-বসতি ও
নির্জন প্রকৃতির সঙ্গে
ভাসমান মেঘপুঞ্জের সখ্যতা
দেখে মনে হচ্ছিলো পৃথিবীর বুকে
এ যেন এক
টুকরো স্বর্গ।
প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি
সাজেকের সৌন্দর্য উপভোগ
শেষে সুস্বাস্থ্য ও
সুন্দর মন নিয়ে
ক্যাম্পাসে ফিরে আসি।
ক্যাম্পাসে ফেরার পথে
বাসের মধ্যকার বন্ধুদের বিখ্যাত কোরাস
গান, কৌতুক, হাসি-ঠাট্টা, একে
অপরের সাথে খুনসুটি ছিলো
একদেহের একআত্মার। বাস
যখন ক্যাম্পাসে এসে
পৌছাল তখন শাওনের
স্মৃতিতে হাতড়ে ছিলো
‘এমন দেশটি কোথাও
খুঁজে পাবে নাকো
তুমি/সকল দেশের
রাণী সে যে
আমার জন্মভূমি!
No comments:
Post a Comment