Monday, 4 January 2016

ফেলানী হত্যার বিচার

কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফ) গুলি করে ফেলানীকে হত্যার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা মৃতদেহ সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলে থাকে ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের অমানবিক দৃশ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং দোষী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের জোর দাবি জানানো হয় ফেলানীর হত্যার দীর্ঘ আড়াই বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর অবশেষে ১৩ আগস্ট জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্ট বসিয়ে শুনানি শুরু করল বিএসএফ
ভারত কর্তৃক রাজশাহীর বাঘা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশী শাহ আলম মালের পরিবারকে লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং সাড়া জাগানো ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচারের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে উলেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায় হচ্ছে সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনা অব্যাহত থাকা। প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০০৯ থেকে বছরের জুন পর্যন্ত বিএসএফ-এর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন দুই শতাধিক বাংলাদেশী। সীমান্তে জঙ্গি সন্ত্রাসী চক্রের পাশাপাশি অস্ত্র-মাদক মানব পাচারকারীদের অপকর্ম রোধ করতে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিএসএফের গুলিতে বারবার বাংলাদেশী নিহত হওয়ার ঘটনা খুবই অমানবিক নিন্দনীয়। বিএসএফের গুলিতে যখনই কোনো বাংলাদেশী নিহত হয়, বিএসএফ অজুহাত হিসেবে চোরাচালান প্রতিরোধের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। প্রশ্ন হল- চোরাচালানের সঙ্গে কি শুধু বাংলাদেশীরাই জড়িত? সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের সঙ্গে উভয় দেশের মানুষের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এমন কী বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তাহলে কেন সীমান্তে নির্মম নৃশংস হত্যাকাণ্ড? ভারত সরকার ফেলানী হত্যার বিচারকাজ শুরু করায় আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। ফেলানী হত্যার বিচার যথাযথভাবে সম্পন্ন হওয়ার প্রেক্ষাপটে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং বাংলাদেশের জনগণের সন্দেহ অবিশ্বাসের জায়গাটি দূর হবে।

 

No comments:

Post a Comment